পেকুয়া প্রতিনিধি ::
পেকুয়ায় পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে ডিএসবি কর্মকর্তার ঘুষ বানিজ্য জমজমাট হয়ে উঠেছে। মো: ছাদেকুর রহমান। পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়ি পাড়া গ্রামের ছৈয়দ নুরের পুত্র। তার পরিবারটি খুবই দরিদ্র। লবণ মাঠের শ্রমিক হিসেবে কাজ করে পরিবার চালায় ছাদেক। নিজের ও পরিবারের স্বচ্ছলতার আশায় বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এ জন্য গত কয়েক বছর ধরে কিছু টাকাও সঞ্চয় করে ভিসার জন্য তার এক আত্মীয়কে জমা দিয়েছেন। গত ০১/০৮/২০১৭ইংরেজী তারিখ পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অধিদপ্তরে আবেদনপত্রও দায়ের করেছেন। সেখান থেকে পাসপোর্ট আবেদনপত্র যাচাই-বাচাই করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পাঠানো হয় কক্সবাজার জেলা ডিএসবি অফিসে। আর ডিএসবি অফিস থেকে সেটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় পেকুয়ায় কর্মরত ডিএসবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবদুর রহমানকে। আর এতেই বাধা বাধে বিপত্তি। ফোন করে ছাদেকুর রহমানকে ওই ডিএসবি কর্মকর্তা পেকুয়া চৌমুহুনীতে ডেকে পাঠান। এরপর ওই যুবকের কাছ থেকে রিপোর্ট প্রেরণের নামে দাবী করায় ২হাজার টাকা। টাকা না দিলে উল্টো রিপোর্ট দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। গুণধর ডিএসবি কর্মকর্তার যেমন হুমকি তেমন কাজ! গত ১৫ দিন পূর্বে ওই যুবকের বয়স কম উল্লেখ করে জেলা ডিএসবি অফিসে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের রিপোর্ট নেগেটিভ পাঠানো হয়।
দরিদ্র যুবক ছাদেকুর রহমান জানান, তার ডিজিটাল জন্ম সনদে তার বয়স আটারো বছরের চেয়ে বেশি। সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম। নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট পাওয়ার কথা। কিন্তু পেকুয়ায় কর্মরত ডিএসবির কর্মকর্তা আবদুর রহমানের দাবীকৃত ঘুষের টাকা দিকে না পারায় আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছে। এখন ওই যুবকের বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। শুধু ছাদেকুর রহমান নয়। এরকম পেকুয়ার আরো বহু যুবকের কাছ থেকে দাবীকৃত ঘুষের টাকা না পেলে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের রিপোর্ট নেগেটিভ লিখে জেলা ডিএসবি অফিসে প্রেরণ করার অহরহ প্রমাণ রয়েছে।
অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের পাসপোর্ট আবেদন ভেরিফিকিশনের নামে পেকুয়ায় কর্মরত ডিএসবি পুলিশের এসআই আবদু রহমান প্রতি আবেদন বাবদ ২হাজার ১০ হাজার পর্যন্ত ঘুষ আদায় করছেন। পেকুয়ায় যোগদান করার পর থেকে ব্যাপক ঘুষ বানিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন ডিএসবির এস আই আবদুর রহমান। কেউ তার ঘুষ বানিজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে কথায় কথায় যে কাউকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্বারা হয়রানী করা হবে সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়াও প্রতিনিয়তই ওই ডিএসবি কর্মকর্তার সাথে এলাকার চিহ্নিত অপরাধীদের সাথে উঠাবসা রয়েছে। পেকুয়া চৌমুহুনীতে নাশকতা মামলার আসামীর আলীশান ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন ওই ডিএসবি কর্মকর্তা।
ভূক্তভোগী যুবক ছাদেকুর রহমান জানান, ঘুষখোর কর্মকর্তার কারণে তার বিদেশ যাওয়া হয়তো আর হবেনা। তবে তার সাথে চরম অন্যায় করা হয়েছে। তিনি ঘুষখোর কর্মকর্তা আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের আইজিপি, ডিআইজি ও কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কাছে হস্থক্ষেপ চেয়েছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে পেকুয়ায় কর্মরত ডিএসবির এসআই আবদুর রহমানে সাথে যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বহুবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে কক্সবাজার ডিএসবির ইন্সপেক্টর জানান, পেকুয়ায় কর্মরত ডিএসবির এসআই আবদুর রহমানের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পাঠকের মতামত: